
সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও::
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জ অফিস ২ কর্মকর্তার কাছে জিম্মি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেঞ্জ কর্মকর্তা ভুপেষ মুখার্জি ও বিট কর্মকর্তা তপন কান্তি পালের সীমাহিন দূর্ণীতিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন বন কর্মচারী, ভিলেজার-হেডম্যান, ও উপকারভোগিরা। তারা এ দু‘কর্মকর্তার অপসারণ দাবী করে গতকাল বুধবার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরে ফুলছড়ি রেঞ্জে দায়িত্ব পালন করার সুযোগে রেঞ্জ কর্মকর্তা ভুপেষ মুখার্জির বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় গড়েছে। তার আস্করায় সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত নাপিতখালীর বিট কর্মকর্তা তপন কান্তি পালও সে পথ ধরেছে।এ দু‘কর্মকর্তার কাছে ভিলেজার-হেডম্যান, বন কর্মচারীরা এখন জিম্মি হয়ে পড়েছেন। স্পেশালের নাম ভাঙ্গীয়ে তারা দু‘জনই ফুলছড়ি রেঞ্জে গড়ে তুলেছে দূর্ণিতীর আখড়া। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ এমনকি উপকারভোগিরা মুখ খুলতে পারছেনা। একের পর এক সামাজিক বনায়নের পাহাড় দখল- বিক্রি, গাছ পাচার ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে একাধিক হেডম্যান ভিলেজারকে নামচ্যুক্ত ও এলাকা ছাড়া করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রেঞ্জ কর্মকর্তা ভুপেষ মুখার্জির রোষানলে পড়ে নাপিতখালী বিট কর্মকর্তা প্রাণেষ বাবু অন্যত্র বদলি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে নাপিতখালী বিট থেকে ভুপেষ মুখার্জি সামাজিক বনায়নের প্লট বরাদ্ধের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন। তার উত্তোরসুরি সদ্য নিয়োগকৃত বিট কর্মকর্তা তপন কান্তি পাল সে পথের হাল ধরেছেন। তপন বাবু দায়িত্ব নেয়ার ১ মাসের মধ্যে ভিলেজার মোক্তার থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবী করেন। স্পেশালের গাড়ি ব্যবহার করে সম্প্রতি সময়ে ইসলামপুর শিল্প এলাকায় কার্গো বোট তৈরীর সরঞ্জাম আটক করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় ভিলেজাররা জানায় ভুপেষ- তপন বাবুর কথায় চলে ফুলছড়ি রেঞ্জ। এখানে চলেনা কারো তদবির। টাকা দিলে সব কিছু হয়, না দিলে হয় মামলা। তারা আরো জানায় এ দু‘কর্মকর্তার কাছে হেডম্যান ভিলেজারেরা নিরাপদ নয়।
সূত্রে জানা গেছে এ দু‘বাবুর অপকর্ম ঢাকতে ইতিমধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে লাখ টাকার মিশনে নেমেছে একটি পক্ষ। যাদেরকে টাকার বিনিময়ে নাপিতখালী বিটে সামাজিক বনায়নের প্লট দেয়া হয়েছে তারাই এখন এসবের দালালি করছেন বলে সূত্র প্রকাশ।
সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী আব্দুস ছালাম, শাহাব মিয়া, নুরুল হক, নুরুল হুদা জানায় প্লট দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ভুপেষ মুখার্জি অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সামাজিক বনায়ন পরিস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করা হয়েছে। বিষয়টি তারা বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন বলেও তারা এ প্রতিবেদককে জানায়।
সূত্র আরো জানায় ইসলামপুর ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড এবং কাঞ্চন মালার শত শত নারী পুরুষ সামাজিক বনায়নের প্লট কাজ করে মজুরী পাননি। বেতন বঞ্চিত নারী-পুরুষরা কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে ভুপেষ মুখার্জিকে অপসারণ করার জন্য মানব বন্ধন করা হবে বলে জানা গেছে।
২০০১ সালের সামাজিক বনায়নের সভাপতি করিম উল্লাহ জানান, রেঞ্জ অফিসার ভুপোষ মুখার্জি ও বিট কর্মকর্তা তপন কান্তি পালের যোগসাজশে সামাজিক বনায়নের গাছ পাচার করা হচ্ছে।
২০০৭-০৮ সালের সামাজিক বনায়নের সভাপতি আমান উল্লাহ জানান এ দু‘ কর্মকর্তার কাছে বন সংশ্লিষ্টরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তিনি তাদের বদলির দাবী করেন।
অন্যদিকে ভুপেষ মুখার্জি ও তপন কান্তির অত্যচারে অপরাপর বন কর্মকর্তারা বদলীর তদবির করছেন বলেও জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বন কর্মকর্তারা জানান, ভুপেষ ও তপন বাবু গভীর রাতে স্পেশালের গাড়ি নিয়ে ঈদগাঁও ভোমরিয়াঘোনা, ফুলছড়ি, ফাসিয়াখালী এলাকার গাছ পাচার কারীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে বের হন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ডিএফও ড. শাহী আলমের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা ভুপেষ মুখার্জি আনিত অভিযোগের সুনির্দিষ্ট কোন প্রামাণ নেই বলে দাবী করেন।
পাঠকের মতামত